পৃষ্ঠা

শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১

আপনার শিশুর ওজন খুব বেশি? ওবেসিটি-তে ভুগছে না তো?

সু স্বাস্থই সকল সুখের মুল এ কথা যেমন সত্য ঠিক তেমনই সু স্বাস্থের জন্য সঠিক ওজন থাকা জরুরি হোক সে বড় বা ছোট। সবার ক্ষেত্রে সঠিক ওজন থাকাটা জরুরি। শিশুদের ওজন বেড়ে গেলে বা ওজন না বাড়লে বা কমে গেলে মা-বাবারা অনেক সময় দুশ্চিন্তাই পড়ে যাই। কিন্তু এত চিন্তার ভিড়ে শিশুর জন্য সঠিক কাজটি করা ভুলে যাই অনেক বাবা মা। ওজন বেড়ে গেলে বা কমে গেলে দরকার শিশুর জীবনযাত্রাই পরিবর্তন আনা। খাওয়া বন্ধ করে ওজন কমানো বা বেশি বেশি খাওয়ানো হতে পারে শিশুর জন্য মারাত্ত্বক ক্ষতির কারন।

একটি শিশুর জীবনযাত্রার মানের উপর নির্ভর করে তার ওয়জন বাড়া বা কমা।

শিশুদের মদ্ধ্যে বিষেশ করে ৮ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ওয়জন বাড়া কমা শুধু খাওয়া দাওয়ার উপরে নির্ভর করে না। আমরা অনেকে জানিই না যে এ বয়সে শিশুর ওজন শুধু খাওয়া দাওয়ার উপরে নির্ভর করে না। শিশুদের ওজন বেড়ে গেলে সারাদিন না খাইয়ে রাখা বা ওজন কমে গেলে সারাদিন বেশি বেশি করে খাওয়ানো হতে পারে শিশুদের জন্য মানসিক চাপের কারন এবং এর জন্য শিশুর ব্রেনের উপরে চাপের সৃস্টি হয় যা একটি শিশুর জন্য মারাত্ত্বক ক্ষতির কারন।

এর সমাধানে সঠিক গাইডলাইন দেন পারসোনা হেলথের প্রধান পুষ্টিবিদ শওকত আরা সাঈদা । ফ্যাট যুক্ত খাবার বেশি খেলে শিশুদের ক্ষেত্রে দুই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এক কিছু কিছু শিশু ফ্যাট যুক্ত খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করে আবার কিছু কিছু শিশু ফ্যাট যুক্ত খাবার একদম পছন্দ করে না। এর সমাধান হচ্ছে-শিশুকে প্রতিদিন নিয়ম করে যে কন ফর্মুলাই শিশুকে দিতে হবে।

১। শিশুর ওজন বাড়াতে প্রতিদিন শিশুর খাদ্যে দুধ রাখতে হবে তবে যদি দুধ এ কোন সমস্যা থাকে তাহলে দই বা চিজ দেয়া যেতে পারে।

২। শিশুর ওজন বেড়ে গেলে ডিম বয়েল করে বা পানিতে পোচ করে দিতে হবে।

৩। শিশুর ওজন কমে গেলে ডিম বাটার বা ঘি দিয়ে দিলে ওজন বাড়ার কাজে লাগবে।

৪। এছাড়া ভাতের সাথে ঘি বা ডিমের পুডিং দিলে ওজন বাড়ার কাজে লাগবে।

অতিরিক্ত ক্যলোরি পরিহার করতে হবে।

যে সমস্ত শিশুর ওজন বেশি তাদের খাবারে কনোভাবেই তাদের ভিটামিন বাদ দেয়া যাবে না। তাহলে শিশু পুষ্টিহিনতাই ভুগতে পারে। তবে খাবার তৈরিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে যেমন ডিম তেল দিয়ে ভাজা যাবে না। এতে করে ডিমের ক্যলোরির পাশাপাশি তেলের ক্যালোরিও যুক্ত হয়ে যাবে। অর্থাৎ খেয়াল রাখতে হবে শিশুর চাহিদা পুরনের পরে যেন বাড়তি ক্যালোরি যুক্ত না হয়ে যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শারিরিক
কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

শিশুর ওজন কমে গেলে বা বেড়ে গেলে শিশুর খাওয়া কমিয়ে বা খাবার অতিরিক্ত না বাড়িয়ে দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন তাদের শারিরিক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

এটিই সব থেকে ভালো উপায়। বাবা-মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে যেনো শিশু সারাক্ষন বসে না থাকে। বাইরে বের হতে না পারলে বাসার ছাদে বা গ্যারেজে বা বাসার ভিতরেই সাইক্লেনিং করতে হবে। এছাড়া স্কিটিং করা বা শিড়িতে উঠা নামা করলেও শারিরিক কার্যক্রম বারে। এতে করে ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়ার প্রবনতা কমে যায়।


খাদ্য তৈরির উপায় পরিবর্তন করতে হবে।

শিশুদের ওজন বেড়ে গেলে তাদের কম খাইয়ে বা ওজন কমে গেলে বেশি বেশি না খাইয়ে দরকার তাদের খাবারের প্রস্তুত প্রনালিতে পরিবর্তন আনতে হবে যেমন- শিশুর ওজন বেশি হলে তার খাবার ডুবো তেলে না ভেজে বেক করে দেয়া উচিৎ। স্যান্ডুইচ এ অতিরিক্ত মেয়োনিজ ব্যাবহার না করে ব্রাউন ব্রেড দিয়ে ঘরে তৈরি করে দেয়া যায়। শাক জাতিও খাবার সব ওজনের শিশুদের জন্য দরকারি। এটি মাছের সাথে মিশিয়ে ঘরে কাটলেট বানিয়েও দেয়া যেতে পারে। আবার রঙ্গিন সবজি চাইনিজ স্টাইলে বানিয়ে দিলেও শিশুদের মধ্যে খাবারের আগ্রহ বাড়বে। আবার নুডুলসের ভিতরে একটু বেশি পরিমানে শব্জি দিয়ে সাথে মাংশ এবং ডিম দিলেও এতে প্রচুর পরিমানে পুস্টি পাওয়া যায়। বার্গারের মদ্ধ্যে ফ্রোজেন পেটি না দিয়ে বরং ঘরে থাকা ফ্রেশ মাংস দিয়ে তৈরি করে দিতে হবে।

ক্যালোরির হিসেব রাখতে হবে।

যে সমস্ত শিশুদের ওজন কমাতে হবে তাদের ক্ষেত্রে ১৫০০ থেকে ১৬০০ ক্যালোরি খেতে পারবে আবার যে সমস্ত শিশুদের ওজন বাড়াতে হবে তাদের ক্ষেত্রে ১৫০০ থেকে ১৮০০ ক্যালোরি পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই পরিমান শিশুদের বয়স ও উচ্চতার উপরে ভিত্তি করে কমতে বা বাড়তে পারে।

 

গাইড লাইন দেখার আগে জেনে নিতে হবে যে আপনার সোনামনির ওজন বাড়ছে কি না। তবে এর জন্য আর এখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার দরকার নেয়। এখন বাড়িতে বসেই আপনি আপনার ছোট্ট সোনামনির ওজন এবং উচ্চতা স্বাভাবিক আছে কিনা।

গ্রোথচার্টঃ

ওজন বাড়ছে না কমছে? তা মাপ্তে হবে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে। এর জন্য মেডিকেল সায়েন্স তৈরি করেছে একটি গ্রোথ চার্ট যা শিশুর উচ্চতা এবং মাথার পরিধি অনুযায়ি তৈরি। যার পেশাগত নাম দেয়া হয়েছে গ্রোথচার্ট। এই চার্টে বলে দেয়া হয়েছে শিশুর বয়স অনুযায়ি উচ্চতা, ওজন এবং মাথার পরিধি কেমন হওয়া উচিৎ।

বয়স / মাস

দৈর্ঘ / সেন্টিমিটার

ওজন / কেজি

মাথার পরিধি / সেন্টিমিটার

৫১.১ - ৫৮.৪

৩.৪ – ৫.৭

৩৫.১ – ৩৯.৫

৫৪.৭ - ৬২.২

৪.৪ – ৭

৩৬.৯ – ৪১.৩

৫৭.৬ - ৬৫.৩

৫.১ – ৭.৯

৩৮.৩ – ৪২.৭

৬০ - ৬৭.৮

৫.৬ – ৮.৬

৩৯.৪ – ৪৩.৯

৬১.৯ - ৬৯.৯

৬.১ – ৯.২

৪০.৩ – ৪৪.৮

৬৩.৬ - ৭১.৬

৬.৪ – ৯.৭

৪১ - ৪৫.৬

৬৫.১ - ৭৩.২

৬.৭ – ১০.২

৪১.৭ – ৪৬.৩

৬৬.৫ - ৭৪.৭

৭ – ১০.৫

৪২.২ – ৪৬.৯

৬৭.৭ - ৭৬.২

৭.২ – ১০.৯

৪২.৬ – ৪৭.৪

১০

৬৯ - ৭৭.৬

৭.৫ – ১১.২

৪৩ – ৪৭.৮

১১

৭০.২ – ৭৮.৯

৭.৪ – ১১.৫

৪৩.৪ – ৪৮.২

১২

৭১.৩ – ৮০.২

৭.৮ – ১১.৮

৪৩.৬ – ৪৮.৫

কোন মন্তব্য নেই: