পৃষ্ঠা

রবিবার, ৩০ মে, ২০২১

শিশুর সঠিক খেয়াল ও যত্নে কি কি করব?

একটি শিশু যখন একটি পরিবারের ঘর আলো করে আসে তখন আমাদের মধ্যে আনন্দের কমতি থাকে না। চারিদিকে যেনো আনন্দের মহল ঝলমল করে ওঠে।

নতুন বাবা মায়েরদের আনন্দের শেষ থাকে না। নতুন মায়ের চিন্তা শিশু কখন খাবে কি পরবে, কেমন করে ঘুমাবে, কেমন করে তাকে গোসল করাবে কেমন করে তাকে সাজাবে। সারাক্ষন যেনো তারই খেয়ালে ডুবে থাকা। বাবা সারাদিন পরে যখন বাসায় ফিরে ক্লান্ত শরিরে বাসায় ফিরে শিশুর মিষ্টি হাসি দেখে ঠিক তখনি যেন পৃথিবির সব ক্লান্তি হারিয়ে যাই। বাবা যখন শিশুর ঘুমন্ত নিস্পাপ মুখের দিকে তাকাই তখন চন্তা করে তার ভবিষ্যৎ কি হবে। সোসাল মিডিয়াই আপনার আদোরের সোনামনিকে নিয়ে যখন কেউ রিয়েকশন করে তখন ও যেনো আনন্দের ডেউ বয়ে যাই।

কিন্তু এত কিছুর মধ্যে আমরা কি শিশুর সঠিক যত্ন নিতে পারছি?

আমরা সবাই আমাদের শিশুকে বেস্ট টাই দিতে চাই কিন্তু কোনটা যে আসলে শিশুর জন্য বেস্ট সেই বিষয়ে আজ জানবো বিস্তারিত। আসুন যেনে নেয়া যাক শিশুর সঠিক লালন পালন ও যত্নের কিছু গুরুত্যপুর্ন বিষয়।

নবযাতক শিশুর ক্ষুধা ও তৃষ্ণা

নবযাতক শিশুর জন্মের পর প্রথম ৬ মাস তাকে মায়ের বুকের দুধ ব্যতিত অন্য কোনও কিছু দেয়া যাবে না। এক ফোটা পানিও দেয়া যাবে না। শিশুর খুধা মিটছে না ভেবে আমরা যে ভুলটা প্রায়ই করে থাকি তা হলো – শিশু মায়ের দুধ খাওয়ার পরেও অনেক সময় কান্না করতেছে তারমানে এই নয়য় যে তার ক্ষুধা রয়ে গেছে। আমরা ভাবি শিশুর হয়তো ক্ষুধা মিটছে না তাই আমরা শিশুকে কৌটার দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক খাওয়াই যা হতে পারে শিশুর জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারন।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নবযাতক বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক তোফাজ্জেল হোসেন খান বলেন যে শিশুকে ২৪ ঘন্টায় ৮-১০ বার বুকের দুধ পান করাতে হবে, তাতে যদি শিশু অন্তত ৬ বার প্রসাব করে এবং নিয়মিত যদি ওজন বৃদ্ধি পায় তাহলে বুঝতে হবে একটি শিশু তার পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে তার মায়ের কাছ থেকেই।

শিশুর ৬ মাস পুর্ন হলে?

শিশুর বয়স যখন ৬ মাস পুর্ন হবে তখন কি করতে হবে সে বিষয়ে আমাদের জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ইফফাত আরা শামসাদ বলেন যখন শিশুর বয়স ৬ মাস পুর্ন হবে তখন থকে শিশুকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খেতে দিতে হবে। যেমন পরিবারের সবার সাথে তৈরি করা সেমি সলিড খাবার খেতে দিতে পারেন। তবে সময় বাড়ার সাথে সাথে খাবারের পরিমান বাড়িয়ে দিতে হবে। শিশুর এ সময় খাবারের তালিকাই ভাত, মাস, মাংশ, সাক, সবজি সব ভালো ভাবে মাখিয়ে মজা করে খাইয়ে দিন। কিন্তু অবশ্যই টিভি বা মোবাইল দেখিয়ে খাবার খাও্যানোর অভ্যাস করাবেন না। শিশুকে খাওয়ানোর জন্য জোরাজুরি করবেন না। চাইলে ওয়র জন্য আলাদা করে খাবার তৈরি করুন তবে অতিরিক্ত পাতলা করে নয়। সব কিছু গুছিয়ে শিশুকে খাওয়াতে বসুন। প্রিতিদিন শিশুর খাবারের তালিকাই একটি ডিম ও একটি ফল যোগ করুন। ডিম খাওয়ানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেনো ডিম অবশ্যয় ভালো ভাবে ভাজা হয়। তা না হলে জিবানু সংক্রমনের ঝুকি থাকে। শিশুকে মোট পাঁচ বার সময় করে প্রতিদিন খাওয়াতে হবে। দুই বেলা ভাত বা খিচুড়ি এবং সকালের নাস্তার পাশাপাশি আরো দুই বেলা পুষ্টিকর নাস্তা দেয়া শিশুর জন্য ভালো। ৬ মাস বয়সের পর থেকেই শিশুকে গ্লাসে করে পানি খেতে দিন কিন্তু মনে রাখবেন মামপট বা ফিডারে করে পানি খেতে দিবেন না। কোমল পানিয়, চিপস, বা বাহিরের কোনও খাবারে অভ্যাস হতে পারে শিশুর জন্য মারাত্বক ক্ষতির কারোন।

কিন্তু শিশুর জন্য স্বাস্থ্য সম্মত পোশাক?

শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিস্কার পোশাক দিতে হবে। তবে মাথা ঢেকে রাখবেন। জন্মের তিন দিন পার হলেই তারপর শিশুকে গোসল করাতে হবে। তবে শিতের সময় শিশুকে একদিন পর পর গোসল করাতে হবে। শিশুর বয়স এক মাস পার হলে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। শিশুর শরিরে আদ্রতা বজাই রাখতে শিশুর শরিরে তেল মাখাতে পারেন। তেলের মধ্যে জল্পাই তেল ব্যাবহার করতে পারেন। তবে শিশুর মুখে তেল দেয়া উচিৎ না। তবে আমরা সাধারনত শিশুকে সরিসার তেল মাখিয়ে থাকি সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেহেতু সরিষার তেল ঝাজালো তাই শিশুর মাথাই এবং মুখে জেনো সরিষার তেল ব্যাবহার না করা হয়। সে ক্ষেত্রে আর একটা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন যদি তেল বেশি ব্যাবহার করা হয়ে থাকে (হোক সে যে কোনও তেল) তাহলে শিশুর মাথাই প্রলেপ পড়তে পারে। শিশুর যত্নে ব্যাবহার করতে পারেন বেবি লোসন, বেবি শ্যাম্পু কিন্তু এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে শিশুর বয়স ১৫ দিনের আগে কিছুই ব্যাবহার করা যাবে না।

শিতে শিশুর চুল না ফেলাই ভালো। শিশুর প্রথম চুল ফেলতে দেড় থেকে দুই মাস অপেক্ষা করা ভালো।


শিশুর ঘুম সঠিক হচ্ছে তো?

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যে শিশুর মাথা রাখতে পাগড়ির মতো গোল একটা কিছু তৈরি করা হয়, আসলে যার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে শিশুর জন্য এক ইঞ্চি উচ্চতার নরম এবং পাতলা বালিশ ভালো তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘাড়ে ভাঁজ না পড়ে। শিশুকে অবশ্যয় মায়ের কাছে ঘুমাতে দিন। তবে খুব খেয়াল রাখতে হবে যেনো শিশুর মুখের উপরে কম্বল, কাঁথা, বিছানার চাদর, বালিশ এমনকি মায়ের শরিরের কোনও অংশ যেমন ওড়না বা শারির আঁচল যেন শিশুর নাক বা মুখে চেপে না যায় এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশু বিছানা থেকে পড়ে না যায়।

 

তথ্য সুত্রঃ

দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন পত্রিকা

সাজগোজ অনলাইন ওয়েব পোর্টাল

কোন মন্তব্য নেই: