পৃষ্ঠা

সোমবার, ২৪ মে, ২০২১

শিশু করোনা আক্রান্ত হলে কি কি বিষয় মেনে চলতে হবে?

বর্তমানে শিশুদের ভিতরে করোনা আক্রান্তের ঘটনা আগের তুলনাই বেড়ে গিয়েছে। তবে ধারনা করা হচ্ছে যে করোনার দ্বিতিয় ঢেউ এর সময় আমাদের মদ্ধ্যে যে সাস্থবিধি মেনে চলার কথা তা অনেক অংশেই শিতিল্য লাভ করেছে এবং শিশুদের স্কুল কোচিং বন্ধ থাকেও যাতে করে তারা বাড়িতে বসে বোরিং ফিল না করে তার জন্য আমরা তাদের বাজারে বা শপিং মলে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি যা আক্রান্ত হও্যার অন্যতম কারন। এর মদ্ধ্য অন্যতম কারন হচ্ছে ঈদ ভ্রমনে বের হওয়া।

এ বিষয়ে ডাঃ মঞ্জুর হোসেন (সভাপতি বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি ও সাবেক পরিচালক ঢাকা শিশু হাসপাতাল) কিছু লক্ষনের বিষয়ে বলেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন।

করোনা আক্রান্ত শিশুদের লক্ষন এখন পর্যন্ত সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। কিছু কিছু সময় শিশুদের ভিতরে লক্ষন দেখা দেয় আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কনো লক্ষন বোঝা যায় না।

লক্ষন সমুহঃ

১. জ্বর হতে পারে

২. শিশুর নাক দিয়ে পানি ঝরা দেখা যেতে পারে

৩. সাথে সর্দি – কাশি দেখা যেতে পারে

৪. এ সময় শিশুদের ভিতরে ক্লান্তিবোধ দেখা যেতে পারে

৫. শারিরিক ব্যাথা অনুভুত এবং সাথে সাথে গা ম্যজম্যজ করতে পারে

৬. এ সময় গলা ব্যাথা থাকতে পারে

৭. ডাইরিয়া ও থাকতে পারে

৮. বড়দের মতো স্বাদ হিনতা বা ঘ্রান শক্তি হ্রাস হতে পারে।

আবার এ সমস্ত লক্ষন বাদেও অন্যদিকে হতে পারে তিব্র কাশি, জ্বর বা শ্বাস্কষ্ট ও হতে পারে। আবার অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে তাদের পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা।

আবার অনেক সময় দেখা গেছে অনেক শিশুর ক্ষেত্রে মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম নামে একটি নতুন সিনড্রোম দেখা গেছে। এর ফলে দেখা যায় যে শিশুর শরিরে জ্বর, পেটে ব্যাথা, বমি বা বমি বমি ভাব, ডাইরিয়া, ত্বকে ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। আবার এর ফলে হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালির এবং স্নাওয়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিছু নির্দেশনা সমুহঃ 

সম্প্রতি দেখা গেছে আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে করোনা আক্রান্ত রোগির সংখা আকাশ ছুয়েছে। তার মদ্ধ্যে শিশুরাও রয়েছে। তাই ভারত সরকার শিশুদের করোনা সংক্রান্ত একটি বিশেষ নির্দেশিকা বের করেছে যাতে অরে অভিভাবকদের সচেতন হতে সহায়তা করছে।

বাংলাদেশ জাতীয় কোভিড – ১৯ সংক্রান্ত চিকিৎসা নিতিমালাতেও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে।  তাছাড়াও বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি এরই মদ্ধ্যে শিশুদের কিভাবে কি চিকিৎসা দিতে হবে তার একটি পুর্নাঙ্গ নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। যার মদ্ধ্যে কি নির্দেশনা হলো . . . . . . . .

১. কোন শিশু যদি করোনা আক্রান্ত হয় কিন্তু যদি তার ভিতরে কোন রকম লক্ষন দেখা না যায় অর্থাৎ পরিক্ষাই করোনা পজিটিভ এসেছে কিন্তু কোনও লক্ষন দেখা যাচ্ছে না তাহলে আমাদের উচিৎ নিয়মিত শিশুর সাস্থ মনিটর করা। কারন আক্রান্তের প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা দেয়া সহয হয়।

২. শিশুদের ভিতরে যদি গলা ব্যাথা, কাশি বা রাইনোনিয়ার মত লক্ষন দেখা যায় তাহলে হাসপাতালে না নিয়ে শিশুকে বাড়িতেই চিকিৎসা করুন। যদি শিশুর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তবেই কেবল হাসপাতালের সরনাপন্য হবেন।

৩. যদি কোনও শিশুর জন্মগত হৃদরোগ, দির্ঘস্থায়ি ফুসফুস এর রোগ বা দির্ঘস্থায়ী প্রতিবন্ধি বা স্থুলতা সহ জটিল কোনও রোগ থেকে থাকে তাদের ক্ষেত্রে একটু বেশি যত্নশিল হতে হবে।

বড়দের এবং শিশুদের করোনা উপসর্গ কি এক রকম?

কোভিড – ১৯ এ আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে ঘন ঘন জ্বর বা কাশি কিন্তু নাও থাকতে পারে।

চিন থেকে পাওয়া এক তথ্যে দেখা গেছে প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে শিশুদের ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস কম মারাত্বক রুপ ধারন করছে। এবং এ তথ্যে আরো বলা হচ্ছে যে প্রাপ্ত বয়স্কদের থেকে শিশুদের লক্ষনও ভিন্ন রকম দেখা যাচ্ছে।

এরি মদ্ধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এ বিষয়ে একটি গবেশনা প্রতিবেদন সয়াব্র সামনে প্রকাশ করেছে। যাতে বিশ্লেষন করা হয়েছে চিন থেকে পওয়া তথ্য। তবে এ রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুদের লক্ষন সম্পর্কে কিছু স্পস্ট করে বলা হয়নি।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে গত ১২ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২রা এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পরিক্ষাগারের তথ্য অনুযায়ি ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগির তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার  ৫২৭ জনের বয়স ১৮ এর নিচে। আরে বাকি ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৮৮ জন রয়েছে ১৮ বছরের উর্ধে।

এখানে দেখা গেছে শিশু রোগি অর্থাৎ যারা ১৮ বছরের নিচে তাদের ক্ষেত্রে মোট ৭৩% এর মধ্যে জ্বর কাশি ও শ্বাসকষ্ট লক্ষ করা গেছে এবং একিসাথে যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তাদের প্রাই ৯৩% রোগির ভিতরে জ্বর কাশি ও শ্বাসকষ্ট পাওয়া গেছে। আক্রান্ত শিশুদের ভিতরে মাত্র ৫.৭% বা ১৪৭ জন শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়েছে যা প্রাপ্ত বয়স্ক রোগির তুলনাই অনেক কম।

এই গবেষনার আওতাধিন শিশু রোগির মদ্ধ্যে মারা গিয়েছে ৩ জন শিশু এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে ১৫ জন শিশুকে নেয়া হয়েছে আইছিইউ তে।

এই গবেষনা আগের গবেষনাকেই সমর্থন করে যে শিশুদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন জ্বর  বা কাশি নাও থাকতে পারে।

তবে এটা স্পষ্ট যে কোভিড – ১৯ শিশুদের জন্য খুব একটা গুরুতর না। তবে এটা ভেবে সাস্থবিধি লংঘনের কোনও সুযোগ নেই। সেই সাথে সামাজিক দুরুত্ব ও প্রোতিরোধক মুলোক ব্যাবস্থা নেয়া সব বয়সী মানুষের জন্য বাধ্যতামুলোক।

তবে গবেষকরা আরো বলছেন যে চুড়ান্ত ফলাফল পেতে বা চুড়ান্ত উপসঙ্ঘার পেতে আরো গবেষনা প্রয়োজন।

 

তবে মুল কথা ঝুকি যেমনই হোক না কেনো আমাদেরকে অবশ্যই সাস্থবিধি মেনে চলতে হবে। মুখে মাস্ক ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকা যাবে না। ঘন ঘন দুই হাত সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ধুতে হবে। আর অবশ্যই মাস্ক ব্যাবহারের নিয়ম মেনে মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে যেমন নাক, মুক যেন ভালো ভাবে ঢেকে থাকে তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাস্ক ব্যাবহারের সঠিক ও বিস্তারিত নিয়ম জানতে ভিজিট করুন কোন মাস্ক কিভাবে পরতে হবে?

 

  

 

তথ্য সুত্রঃ                                                                                                                                  

দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন পত্রিকা
দৈনিক কালের কন্ঠ অনলাইন পত্রিকা
দৈনিক যুগান্তর অনলাইন পত্রিকা

কোন মন্তব্য নেই: